গরমের দিনে হাসপাতাল গুলিতে জন্ডিস রোগীর পরিমাণ প্রতি বছরই বাড়ে । চৈত্র মাসের তাপে মানুষ কিছুটা স্বস্তি পেতে কাটা ফল, লেবু দেওয়া ঠান্ডা পানির সরবত, বরফ দেওয়া রঙিন পানির আর হরেক রঙের আইসক্রিম ইত্যাদি খেয়ে থাকে আর সাধারণত এই সব খাবারের মাধ্যমেই পানিবাহিত এই রোগ আমাদের শরীরে এসে হাজির হয় ।
“জন্ডিস হলে চোখ ও ত্বক হ্লুদাভাব দেখায় “
জন্ডিস কীঃ
কোনো ভাইরাস, ব্যাকটেরিয়া, ওষুধ বা মদ্য পানের কারনে লিভার বা যকৃতের কোষগুলো নষ্ট হতে থাকলে জন্ডিস দেখা দেয় । মুলত জন্ডিস কোনো রোগ নয়, রোগের উপসর্গ।
কী কী ধরনের জন্ডিস হয়ঃ
একটি জন্ডিস, যেটা লিভারকে ক্ষত করে, একে হেপাটাইটিক জন্ডিস বলে। এগুলো সাধারণত ভাইরাল হেপাটাইটিস। হেপাটাইটিস এ, হেপাটাইটিস বি, হেপাটাইটিস সি, হেপাটাইটিস ডি, হেপাটাইটিস ই—এই কয়টি প্রচলিত। আরো অনেক ভাইরাস রয়েছে, যেগুলো এই পর্যায়ে অত প্রচলিত নয়।
জন্ডিসের কারনঃ
এ ছাড়া গুরুত্বপূর্ণ জিনিস হলো মদ্যপান। মদ্যপান জন্ডিস তৈরি করে। এ ছাড়া বিভিন্ন ওষুধের কারণে হতে পারে। অনেক রোগী টিবির ওষুধ খাচ্ছে, হঠাৎ করে দেখা গেল জন্ডিস হচ্ছে। খুব ক্ষতিকর। এগুলো ক্ষতিকর। সুতরাং ওষুধের জন্য হতে পারে। অন্য রাসায়নিক পদার্থের জন্য হতে পারে। এ ছাড়া পিত্তনালি, পিত্তথলি বা গলব্লাডারের সমস্যার কারণে জন্ডিস হতে পারে। লিভারের কোষভেদে হেমোলাইটিক কন্ডিশনে, সেখানেও দেখা যাচ্ছে জন্ডিস হয়। জন্মগতভাবে কিছু কিছু রোগী জন্ডিসে ভুগতে পারে। জন্মের প্র পরই অনেক সময় শিশুর জন্ডিস হতে পারে
জন্ডিসের লক্ষণঃ
জন্ডিস হলে আক্রান্ত ব্যক্তির হঠাৎ করে বমি বমি ভাব, ক্ষুধামান্দ্য ও দুর্বলতা দেখা দেবে। ধূমপায়ীদের কাছে সিগারেটও বিস্বাদ লাগবে। চোখ, ত্বক ও প্রস্রাব যথেষ্ট পানি খাওয়ার পরও হলুদ বর্ণ ধারন করবে । গা চুলকাতে পারে। এ ছাড়া ডান দিকের পাঁজরের নিচে ব্যথাও করতে পারে।
জন্ডিস হয়েছে বলে সন্দেহ হলে দ্রুত ডাক্তারের সাথে যোগাযোগ করে পরীক্ষা করে নিশ্চিত হওয়া প্রয়োজন । এ সময় ঘরে বসে পূর্ণ বিশ্রাম ও স্বাভাবিক খাবার গ্রহণ করতে হবে। লিভার বিশেষজ্ঞরা বারবার গ্লুকোজের শরবত, আখের রস, ডাবের পানি ইত্যাদি নিষেধ করেন। কারন এতে পেট ফেঁপে যেতে পারে। তাই স্বাভাবিক খাবার খাওয়ায় উত্তম। তবে চর্বিজাতীয় খাবার পরিহার করা প্রয়োজন।